ওয়েব ডেস্ক: দীর্ঘদিনের যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়েছে গাজা (Gaza)। ইজরায়েলের (Israel) আক্রমণে প্রদেশের প্রায় কোনও বাড়িই আস্ত নেই। বিগত দু’বছরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু দেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের (Middle East War) এই প্রান্তিক প্রদেশ। তবে যারা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের কাছে জীবনটা যেন মৃত্যুর থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। নেই পানীয় জল, নেই খাবার, নেই মাথার উপরে ছাদ। এভাবেই জীবনের থেকে বিমুখ হয়ে বেঁচে রয়েছে গাজাবাসী। আর এবার আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ (Famine) ঘোষণা করল রাষ্ট্রপুঞ্জ (United Nations)। মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে দুর্ভিক্ষের শিকার হল এই প্রদেশ।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে গাজার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ ভয়ঙ্কর খাদ্যসঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার এক বিবৃতিতে বলেন, “এই দুর্ভিক্ষ হত না, আটকানো যেত। কিন্তু ইজরায়েলের নিয়মিত ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিয়ে এসেছে। সেই কারণে গাজায় খাদ্য পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।” তবে গাজায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছে, তা মানতে নারাজ ইজরায়েল। এটিকে ‘হামাসের মিথ্যা প্রচার’ আখ্যা দিয়েছে সেদেশের বিদেশমন্ত্রক।
আরও পড়ুন: ‘খুলে দেওয়া হবে নরকের দরজা’! হামাসকে চূড়ান্ত হুমকি ইজরায়েলের
রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছর ১৫ অগাস্ট থেকে গাজা সিটি জেলায় দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্য ও খাদ্যাভাবে ভুগছেন। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬.৪ লাখে পৌঁছাতে পারে, যা গাজার মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দুর্ভিক্ষ দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ, আগামী একমাসের মধ্যে গোটা গাজা উপত্যকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে।
তথ্য বলছে, গাজায় স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ৯৮ শতাংশ চাষযোগ্য জমি নষ্ট হয়ে পড়েছে, গবাদি পশুও প্রায় শেষ, আর সমুদ্রে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর পাশাপাশি পানীয় জল, স্বাস্থ্যসেবা ও স্যানিটেশনও মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
দেখুন আরও খবর: